মোঘল আমলের স্থাপত্যকৌশলে গড়ে ওঠা পানাম নগরটি নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত। এটি একটি ঐতিহাসিক ও জনপ্রিয় পর্যটন স্পট। সাধারনভাবে এই নগরটি হাবেলী সোনারগাঁও নামে জনসাধারণের নিকট পরিচিত।অনেকের নিকট এটি 'হারানো নগরী' নামেও পরিচিত। এক সময় এই নগরটি ছিল সমৃদ্ধশালী ও বিখ্যাত জনবহুল একটি নগর ছিল। এই পানাম নগরের রাস্তার দৈর্ঘ্য ১ মাইলেরও বেশি। পানাম নগরের রাস্তার দুপাশে বেশ কিছু বড় বড় ইমারত দেখতে পাবেন। এসকল ইমারত ইট দ্বারা নির্মিত। প্রায় ৫২টির মত ইমারত দেখতে পাবেন এই নগরীটিতে। এর মধ্যে রাস্তার উত্তর পাশে ৩১ টি এবং দক্ষিণ পাশে ২১টি ইমারত রয়েছে। এ সকল ইমারত মুলত মসজিদ, মাদ্রাসা, মাজার, আবাসিক এলাকার বাড়ি ছিল। এছাড়াও মন্দির, মঠ, সরাইখানা, কূপ, নাচঘর, ঠাকুরঘর, টাকশাল, দরবার কক্ষ, গুপ্তপথ ইত্যাদিও দেখতে পাবেন। ইমারতগুলোর বেশির ভাগই দ্বিতল বিশিষ্ট। নগরীটি একটি লেক/খাল দ্বারা চারদিকে পরিবেষ্টিত ছিল। নগরীতে একটি প্রবেশদ্বারও ছিল। সবকিছু মিলে এটি একটি সুরক্ষিত নগরী ছিল।
এখানে শুধু মোঘল আমলের নিদর্শনই নয়, ব্রিটিশ আমলে ইংরেজরা একটি আধুনিক ইমারত নির্মাণ করেছিল, যা 'কোম্পানী-কা-কুঠি' নামে পরিচিত। ইংরেজরা তাদের 'ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী' এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম এই নগরী থেকে পরিচালনা করত। বিখ্যাত মসলিন কাপড়ের প্রচার এবং প্রসার এই পানামা নগরী থেকেই।
ঐতিহাসিক এই 'হারানো নগরী'টি দেখতে চাইলে রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি মোগড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডে আসতে বহে। সেখান থেকে এই পানামা নগরীতে স্থানীয় যে কোন যানবাহনে করে আসতে পারবেন। নগরীটি সোনারগাঁও জাদুঘরের খুব নিকটে হওয়ায় পর্যটকরা এই জাদুঘরটি ঘুরে এসে তারপর এখানে আসেন। জাদুঘর থেকে মাত্র ৭-১০ মিনিট হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন এখানে।
Last Updated Date of This Artical : 0000-00-00